ঢাকা থেকে যেভাবে আসবেন:
সদরঘাট থেকে সকাল ০৭ টা থেকে ১ অথবা আধা ঘন্টা পরপরই লঞ্চ ছাড়ে৷ চাঁদপুর ঘাটে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা থেকে ৩ঘন্টা ৩০ মিনিট।
ভাড়াঃ
ডেক- ১০০ টাকা
চেয়ার- ১৫০ টাকা
কেবিন সিঙেল নন এসি- ৫০০ টাকা
ডাবল নন এসি- ৮০০ টাকা
এসি সিঙেল- ১০০০ টাকা
এসি ডাবল- ১৫০০ টাকা করি নিতে পারে।
চাঁদপুর লঞ্চঘাট নেমেই খিদা লাগলে খেয়ে নিতে পারেন খাবার হোটেল আছে কয়েকটা। ভাত,ডাল আনুষঙ্গিক নরমাল দাম আরইলিশ প্রতি পিস ১২০-১৫০ টাকার ভিতরে নিবে।
কুমিল্লা থেকে যেভাবে আসবেন:
বোগদাদীয়া বা অন্য কোন লোকাল বাসে চড়ে চাঁদপুর বাস স্ট্যান্ডে আসবেন। ভাড়া জনপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা নিবে।সেখানে থেকে আপনি যে কোন জায়গায় যেতে পারবেন অটো বা রিক্সা ভাড়া করে।
ঘোরাঘুরির জন্য বেস্ট জায়গা:
১. বড় স্টেশন বা তিন নদীর মোহনা:
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে অটোতে করে চলে যান বড় স্টেশন জনপ্রতি ১০-১৫ টাকায়। বড় স্টেশনে নেমে খুব কাছ থেকে দেখতেপারেন তিন নদীর মোহনা। পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া এই তিন নদী মোহনা এখানে এসে এক হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য বেস্টএকটি জায়গা। বড় স্টেশন পার্কে বসার জন্য জায়গা আছে। খেতে পারেন ফুচকা ও চটপটি। বিভিন্ন রাইড আছে ইচ্ছে করলেউপভোগ করতে পারবেন।
২. মিনি কক্সবাজার বা হাইমচর:
তারপর ভালো হয় ট্রলারে উঠে ঘুরতে চলে যান মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত হাইমচরে। খরা মৌসুমে পানি শুকিয়ে এলেএখানে বিশাল বড় চর জেগে ওঠে। কক্সবাজার এর মত দেখতে বলে মানুষ এর নাম দিয়েছেন মিনি কক্সবাজার। বড় স্টেশনেরকাছেই ট্রলার থাকে। জনপ্রতি ৭০-১০০ টাকা করে। যাওয়া আসার ফি একবারই দিতে হয়। যাওয়ার পর যতক্ষণ ইচ্ছে সময়কাটিয়ে বিকেল ০৫:৩০ এর মধ্যে যেকোনো ট্রলারে ফেরা যায়। খুবই সুন্দর এবং উপভোগ্য ওখানে গিয়ে কেউ হতাশ হবেন না।সাথে ফুটবল আর গ্রুপ ট্যুর হলে তো কথাই নেই। চরে নেমে ইচ্ছে মতো খেলাধুলা করে নিলেন। নদীর পানিতে ঝাপাঝাপি করেগোসল সেরে ট্রলারে করে ফিরে আসুন বড় স্টেশনে।
৩. রুপসা জমিদার বাড়ি ও আউয়ালের মিষ্টি:
তারপর অটোতে চড়ে চলে আসুন চাদঁপুর বাস স্ট্যান্ডে। উঠে পড়ুন ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসে বা সিএনজি তে। ফরিদগঞ্জবাজার এসে রোডের বাঁ পাশে রূপসা বাজারের লোকাল সিএনজি পাবেন। সিএনজি রুপসা জমিদার বাড়ির গেইটের পাশেইনামিয়ে দিবে। জমিদার বাড়িতে ঘোরাঘুরি শেষ করে সেখান থেকে ফিরে আসুন ফরিদগঞ্জ বাজারে। টমটমে উঠে আউয়ালেরমিষ্টির দোকানে এসে নামাতে বলুন। দোকানের নাম আউয়াল সুইটস। এমন মিষ্টি কখনো খেয়েছেন কিনা তা মুখে নিলেই বুঝতে পারবেন। এক মিষ্টি খেয়ে চোখ বন্ধ করে বলবেন দেন, আর বিল দেয়ার সময় খেয়াল করবেন, কোন ফাঁকে খেয়ে ফেলেছেন আট-দশটা। প্রথম সাক্ষাতে আমি যে কয়টা খাইছিলাম তার কোন হিসাব নেই। ফরিদগঞ্জ গিয়ে আউয়ালের মিষ্টি না খাওয়া মানেমহাপাপ করা।
৪. মতলবের খীর ও অনিন্দ্য সুন্দর মতলব বেড়িবাধ:
ইনজয় করে এবার আসুন মতলবের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীর খাইতে ও বেড়িবাধ ঘুরতে। ফরিদগঞ্জ থেকে সিএনজি করে চলে আসুনবাবুরহাটে সেখান থেকে মতলব বাজারের সিএনজি পাওয়া যায় ৪০ টাকা ভাড়া লাগবে আসতে। মতলব বাজার নেমে ঘোসকেবিন বা লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার বললেই মানুষ চিনিয়ে দেবে। এই দুই দোকানে মতলবের বিখ্যাত ভাল ক্ষীর পাওয়া যায়।ছোট খোরা বা পাতিল দেড়শ থেকে দুইশ টাকা খরচ নেবে আর কেজি পরবে ৮০০-৯০০ টাকা এর মধ্যে। খেলেই বুঝবেন কিসুস্বাদু? আর কি মিষ্টি? কি মজা?
বাড়ি এসেও হাতে এই ক্ষীরের ঘ্রাণ পাবেন।
পরন্ত বিকেলে কিছু ভালো সময় যদি কাটাতে চান তাহলে চলে যান মতলব বেড়িবাধের উপর ঘুরতে। সাথে দেখা হয়ে গেলবাংলাদেশের ২য় বৃহওম সেঁচ প্রকল্প। মতলব বাজার থেকে একটু সামনে হাঁটলেই মতলব ফেরিঘাট। ফেরিঘাট থেকে নৌকা দিয়েনদী পার হয়ে উঠে পড়ুন মতলব বেড়িবাধে। বাঁধের এক পাশ জুড়ে মেঘনা নদীর অববাহিকা আর অপর পাশ জুড়ে ধনাগোদানদীর অববাহিকা। বেড়ি বাঁধের উপর বসে মেঘনা নদীর গর্জন শুনতে পারবেন।মেঘনা নদীর কূলে বসে ঠান্ডা বাতাস খেতেপারবেন। নদীর মৃদূ বাতাস আপনাকে একদম হিমশীতল করে দেবে। সারাদিনের ক্লান্তি আপনার নিমিষেই দূর হয়ে যাবে।
ফেরাঃ
ইচ্ছে করলে মতলব হয় ঢাকা যেতে পারেন আবার আপনি চাঁদপুর যেয়ে ঢাকা যেতে পারেন।
রুট-১: সিএনজি করে মতলব টু চাঁদপুর ভাড়া ৬০ টাকা নেবে। বিকাল ৪/৫/৬/৭ থেকে রাত ১২ আরো সময়ে লঞ্চ ছাড়ে।৩ ঘন্টায়চলে আসুন ঢাকার সদরঘাটে।
রুট-২: মতলব থেকে সিএনজি করে চলে আসুন সোজা দাউদকান্দি ব্রিজ ভাড়া ১৩০-১৫০ টাকা নিবে। দাউদকান্দি ব্রিজ থেকেবিআরটিসি বাসে করে গুলিস্তান আসা যায় সময় লাগে দুই ঘন্টা ভাড়া নিবে 110 টাকা।
একদিনের জন্য আশারাখি ভালো একটা ট্যুরে হবে।
যাওয়ার সময় বাসার জন্য চাঁদপুরের তাজা ইলিশ, মতলবের খীর আর আউয়ালের মিষ্টি নিয়ে যেতে পারেন।
যেখানেই ভ্রমণ করুন ভালো কথা ময়লা ফেলবেন না। যেখানেই যাবেন ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন।
0 Comments