ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর পশুর হাটে আজ শেষ দিনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আসছে। বেচাবিক্রি এখনো জমেওঠেনি। হাটে ক্রেতা কম। যারা হাটে আসছেন তারা ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু দেখছেন। কেউ কিনছেনও। এবার ছোট গরুরচাহিদা বেশি। গরু কিনে খুশি ক্রেতারা। বিক্রেতারা ভালো দাম পাচ্ছেন না। করোনা এবং বন্যার দুর্যোগকে দায়ী করছেন গরুব্যবসায়ীরা।
গতবারের মতো এবারও পশুর দাম হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে অনলাইনে পশু কেনাবেচাও বেশ জমে উঠেছে। সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পিছিয়ে নেই। করোনা সংক্রমণ রোধে ই-কমার্স অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সহায়তায় অনলাইনে কোরবানির পশু কিনে অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানি, মাংস প্রক্রিয়াকরণ এবং বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে সিটিকরপোরেশন। সেখান থেকেই যাচাই-বাছাই করে গরু কিনছেন ক্রেতারা। তাই অনলাইনে পশুর হাট জমজমাট। পাঁচ দিনব্যাপীস্থায়ী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১৭টি হাটে সারা দেশ থেকে পশু আসছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবংসামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পশু কেনাবেচার যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কয়েকটিহাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা আসছেন। পশু দেখছেন। ব্যবসায়ীরা দাম হাঁকাচ্ছেন। ক্রেতার চাহিদার আলোকে ব্যবসায়ীরা দামকমাচ্ছেন এবং বাড়াচ্ছেন। ৫০-৭০ হাজার টাকা দামের গরু বিক্রি বেশি।
সময়ের সঙ্গে দাম ওঠানামা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে বলছেন, এবার গরুর হাটের সংখ্যা কম হওয়ায় গরুওকম উঠবে। এ কারণে শেষ দিকে গরু সংকটে দাম বেড়ে যেতে পারে। মৌসুমি অনেক ব্যবসায়ী এবার গরু আনছেন না। গতকালআফতাবনগর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এ হাটে অন্তত তিন হাজার গরু উঠেছে। প্রতি বছরের মতো এবারও উৎসুক মানুষের ভিড়লক্ষ্য করা গেছে। অনেককে হাটে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। ২-৩ জন করে একত্রে গরু দেখছেন, দাম শুনছেন। স্বাস্থ্যবিধিমেনে চলতে মাইকিং করা হলেও ব্যবসায়ী, ইজারাদার প্রতিনিধি বা ক্রেতারা কমই তা মানছেন।
জামালপুরের ব্যবসায়ী ইমরুল কায়েস জানান, হাটে তিনটি ষাঁড় এনেছেন। দেশীয় প্রজাতির প্রতিটি ষাঁড়ের দাম তিনি হেঁকেছেন১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
ক্রেতাদের একজন ইমান আলী বলেন, আমার বাসা বনশ্রী। এ হাট থেকে গরু কেনার চিন্তা করছি। এ জন্য হাটের পরিস্থিতিবোঝার জন্য এসেছি। মেরাদিয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রি নেই, ক্রেতারা ঘোরাঘুরি করে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। ধূপখোলাগরুর হাটে ছোট গরুর বিক্রি বেশি। ছাগলও বিক্রি হচ্ছে বেশ। ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি এবংবড় সাইজের গরু দরদাম করে চলে যাচ্ছেন ক্রেতা। রাজধানীর সবচেয়ে বড় স্থায়ী পশুর হাট ঐতিহ্যবাহী গাবতলী গরুর হাট।কিন্তু এবার কোরবানি ঈদে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও ক্রেতা নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ঈদের আর তিন দিন বাকি থাকলেও হাটে তেমন বেচাকেনা নেই। তবে অনেকেই হাটে আসছেন। দাম-দর করছেন, কিন্তু গরুকিনছেন না। যারাও আসছেন তাদের চাহিদা ছোট কিংবা মাঝারি সাইজের গরু। ফলে মাথায় হাত পড়েছে গরু ব্যবসায়ীদের।ন্যায্যমূল্যের চেয়ে কম দাম চেয়েও বিক্রি করতে পারছেন না গরু। শেষ মুহূর্তে কাক্সিক্ষত দামে বিক্রি করতে পারবেন কিনা তানিয়েও সংশয়ে আছেন। শুধু বেপারী নয়, মাথায় হাত পড়েছে পিকআপ চালকদেরও। হাট থেকে তেমন গরু বিক্রি না হওয়ায়তারাও তেমন ট্রিপ দিতে পারছেন না। এদিকে, গাবতলী পশুর হাটে গরুপ্রতি ২-৩ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগকরেছেন বেপারীরা। যদিও হাট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে বলছে, কিছু জায়গার মালিক অন্যরা হওয়ায় তারা জোরপূর্বকবেপারিদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। অপরদিকে হাটের প্রতিটি গেটে পর্যাপ্ত সুরক্ষাব্যবস্থা থাকলেও নিয়ম মানছে না কেউ।কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী রতন কুমার বলেন, গত রবিবার ১৫টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। এখনো একটিও বিক্রি হয়নি। ন্যায্যদামের চেয়ে কম চেয়েও বিক্রি করতে পারছেন না।
0 Comments